লাইফস্টাইল ডেস্ক,
চোখকে বলা হয় মনের জানালা। তবে শুধু মনের নয়, শরীরের নানা রোগ-ব্যাধির কথাও চোখ আগেভাগে জানিয়ে দেয়। চিকিৎসকরা বলছেন—চোখের আকার, রঙ বা পরিবর্তন শরীরের ভেতরে লুকিয়ে থাকা অনেক অসুখের প্রাথমিক ইঙ্গিত বহন করে। যন্ত্রপাতি ছাড়াই কেবল চোখ পর্যবেক্ষণ করেও অনেক রোগ চিহ্নিত করা সম্ভব।
সম্প্রতি বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক—চোখ দেখে কোন কোন অসুখের খবর পাওয়া যায়।
চোখের তারা বা পিউপিল
আলোতে চোখের তারা বড়-ছোট হয়। প্রতিক্রিয়ায় অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে তা আলঝাইমার্সসহ স্নায়বিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। মাদক গ্রহণের ক্ষেত্রেও তারায় অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দেয়—কোকেন বা অ্যামফিটামিন সেবনে তারা বড় হয়, আর হেরোইন সেবনে তারা ছোট হয়ে যায়।
লাল বা হলুদ চোখ
চোখ টকটকে লাল হলে তা মাদক বা অ্যালকোহল সেবনের লক্ষণ হতে পারে। তবে সংক্রমণ, প্রদাহ বা গ্লুকোমার কারণেও দীর্ঘস্থায়ী লালচে ভাব দেখা দেয়, যা অন্ধত্বের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে শ্বেত মণ্ডল হলুদ হয়ে গেলে জন্ডিসের ইঙ্গিত দেয়। লিভারের সমস্যা, হেপাটাইটিস, টিউমার কিংবা কিছু ওষুধের প্রভাবেও চোখ হলুদ হতে পারে।
চোখে রক্তের ছাপ
শ্বেত মণ্ডলীতে লালচে দাগ বা সাবকনজাংকটিভাল হেমারেজ দেখা দিলে তা সাধারণত ক্ষতিকর নয় এবং কয়েক দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে এটি বারবার হলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
কর্নিয়ায় সাদা বা ধূসর রিং
কর্নিয়ার চারপাশে রিং দেখা গেলে তা শরীরে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বা হৃদরোগের ঝুঁকি বোঝায়। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হয় আর্কাস সেনাইলিস। বয়স বাড়ার সঙ্গে এ লক্ষণ অনেকের চোখেই দেখা দেয়।
চোখের মেদ বা গ্রোথ
চোখের সাদা অংশে হলদেটে টুকরো (পিংগুয়েকুলা) বা হালকা গোলাপি গ্রোথ (টেরিজিয়াম) সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে তৈরি হতে পারে। সাধারণত ক্ষতিকর নয়, তবে কর্নিয়ার ওপর ছড়িয়ে পড়লে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করার ঝুঁকি থাকে। প্রয়োজনে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এগুলো সরানো যায়।
ফোলা চোখ
কান্না ছাড়াই হঠাৎ চোখ ফুলে ওঠা থাইরয়েডের সমস্যা নির্দেশ করতে পারে। আবার এক চোখ ফোলা হলে তা আঘাত, সংক্রমণ বা টিউমারের ফল হতে পারে।
চোখের পাতার সমস্যা
চোখের পাতায় আঞ্জনি (stye) হলে পাতা লাল হয়ে ফুলে যায়। সাধারণত নিজে থেকেই সেরে যায় বা গরম পট্টি ব্যবহার করলে দ্রুত ভালো হয়। এ ছাড়া চোখ ওঠা (কনজাংকটিভাইটিস) ও চোখের পাতায় অনিয়মিত টুইচিং (ocular myokymia) মানসিক চাপ, পুষ্টির অভাব বা অতিরিক্ত কফি খাওয়ার কারণে দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ
মন্তব্য করুন