ভয়েস অফ গোপালগঞ্জ ডেস্ক,
দীর্ঘ ৯০ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ সোমবার থেকে উন্মুক্ত হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। টানা তিন মাস বিশ্রামের পর নতুন সাজে সেজেছে এই অপরূপ বনভূমি। অভয়ারণ্য ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে আবারও শুরু হবে জেলেদের মাছ ধরা এবং পর্যটকদের পদচারণা। ইতোমধ্যেই ১১টি পর্যটনকেন্দ্রকে ঘিরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বন বিভাগ।
করমজল, হারবাড়িয়া, দুবলা, কটকা, কচিখালী, নীলকমল, কালাবগী ও শেখেরটেকসহ সমুদ্রতীরবর্তী ও বনাঞ্চলের স্পটগুলোতে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে তৈরি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। নতুনভাবে সাজানো হয়েছে লঞ্চসহ বিভিন্ন নৌযানও।
২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছর ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। এ সময় মাছ ও কাঁকড়ার প্রজনন এবং বন্যপ্রাণী সুরক্ষার জন্য মধু আহরণ, মাছ ধরা ও পর্যটন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকে।
জেলেদের দুশ্চিন্তা
লম্বা বিরতির পর আবারও সুন্দরবনের খালে-নদীতে নামতে প্রস্তুত জেলেরা। তবে একইসঙ্গে হাজার হাজার বনজীবী একসাথে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গেলে প্রত্যাশিত আয় হবে কিনা—তা নিয়ে সংশয়ে আছেন তারা। এ কারণে বনকর্মীদের টহল বাড়ানো এবং অভয়ারণ্যের আয়তন কিছুটা হ্রাস করার দাবি তুলেছেন জেলেরা।
নিষেধাজ্ঞার সময়ে সংসার চালাতে অনেকেই স্থানীয় সমিতি, এনজিও বা মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন। আবার জাল ও নৌকা প্রস্তুতের জন্যও দাদন ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। জেলেদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম কষ্টে পড়তে হয় তাদের।
তারা জানান, তিন মাসের বদলে যদি নিষেধাজ্ঞা দুই মাস করা যায় এবং এ সময়ে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা রাখা যায়, তাহলে বনজীবীরা দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে মুক্তি পাবে।
সরকারি উদ্যোগ
বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “মৎস্যজীবী ও বনজীবীদের সহায়তার জন্য তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মৎস্য দপ্তর তা যাচাই করছে। আগামী বছর থেকে জেলেরা খাদ্য সহায়তা পাবেন।”
মন্তব্য করুন