কলাম লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ও প্রকাশক,
ভয়েস অফ গোপালগঞ্জ।
বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রযুক্তির প্রসার ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের বিস্তার বাংলাদেশের জন্য এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ফ্রিল্যান্সিং, যা আগে শুধু আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিত একটি কাজের ধরন হিসেবে ধরা হতো, এখন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে সক্ষম। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য এটি নিজস্ব আয়, দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।
বাংলাদেশের টেকসেভি যুবকরা এখন বিভিন্ন ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, লেখা, অনলাইন মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং এবং কনটেন্ট ক্রিয়েশনে দক্ষতা অর্জন করছে। ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম যেমন Upwork, Fiverr, Freelancer-এর মাধ্যমে তারা সরাসরি বৈশ্বিক ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজ করছে। এতে একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়ছে, অন্যদিকে দেশের ডিজিটাল দক্ষ কর্মশক্তি আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে।
ফ্রিল্যান্সিং শুধু ব্যক্তিগত আয়ের উৎস নয়, এটি দেশের ডিজিটাল অর্থনীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে নতুন পথ তৈরি করেছে। COVID-19 মহামারির সময় এটি আরও সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অনেকেই স্থায়ী অফিসের বাইরেই বৈশ্বিক ক্লায়েন্টদের সঙ্গে কাজ করে নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি সাধন করতে পেরেছেন।
তবে শুধু সুযোগই যথেষ্ট নয়। সরকারের উচিত প্রশিক্ষণ, প্রশিক্ষণমূলক কোর্স, ইন্টারনেট অবকাঠামো ও নিরাপদ পেমেন্ট সিস্টেম নিশ্চিত করা। এতে ফ্রিল্যান্সিং শুধু ব্যক্তিগত নয়, জাতীয় অর্থনীতির জন্যও শক্তিশালী অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
ফ্রিল্যান্সিং হল মেধা, সৃজনশীলতা ও উদ্যোগের মিলনস্থল। দেশের যুবসমাজ যদি যথাযথভাবে এটিকে কাজে লাগাতে পারে, তবে বাংলাদেশ শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়, প্রযুক্তিগতভাবে ও বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে শক্ত অবস্থান দখল করতে পারবে। ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে ডিজিটাল অর্থনীতির পথ ধরতে হলে ফ্রিল্যান্সিং হবে তার অন্যতম হাতিয়ার।
মূলকথা: ফ্রিল্যান্সিং শুধু আয়ের মাধ্যম নয়; এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক শক্তি। যথাযথ দিকনির্দেশনা, প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামোর মাধ্যমে দেশের যুবসমাজ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।
মন্তব্য করুন