ভয়েস অফ গোপালগঞ্জ ডেস্ক,
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ও পান বরজ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। পাশাপাশি হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ব্যবহৃত একমাত্র শ্মশানঘাটও নদীতে হারিয়ে গেছে। এতে অন্তত ৮০-৯০ জন পানচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুর, হাটখোলাপাড়া এবং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আরকান্দি ও মাধবপুর এলাকায় চার থেকে পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে ভয়াবহ ভাঙন চলছে।
স্থানীয়রা জানান, জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ভাঙনকবলিত স্থান থেকে পদ্মা নদী রক্ষা রায়টা-মহিষকুন্ডি বেড়িবাঁধের দূরত্ব এখন মাত্র ৫০ মিটার। এতে বসতবাড়ি, ফসলি জমি, পান বরজসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা মারাত্মক হুমকির মুখে। ভাঙনের কারণে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকাবাসী।
মাধবপুরের ভাঙনকবলিত এলাকায় রয়েছে বিস্তীর্ণ পান বরজ। গত কয়েকদিনের ভাঙনে প্রায় ৩ হাজার পিলি (সারি) পান বরজ নদীতে তলিয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ব্যবহৃত একমাত্র শ্মশানঘাটও পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আমিরুল আলি জানান, তার ভাই আরজেত আলি ও ছেলেদের প্রায় ৭-৮ বিঘা জমি ভাঙনে গেছে। এতে তাদের ৮০০ পিলি পান বরজ ধ্বংস হয়েছে। একমাত্র উপার্জনের উৎস হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব।
আরও কয়েকজন কৃষক— মবির পণ্ডিত, রেজাউল, জামশেদ, রাব্বি, রহমান, কাশেম, নুরা, নাসির, আনেজ, আজগর, আবু ও শিহাব জানিয়েছেন, প্রত্যেকে অন্তত ১০০ পিলি করে পান বরজ হারিয়েছেন।
পানচাষি আবুল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দুই বছর আগে আগুনে বরজ পুড়ে গিয়েছিল, এবার নদী গিলে নিল। আমরা কৃষকরা একেবারেই অসহায়।”
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, “বাহাদুরপুরের ভাঙনের বিষয়টি এখনই জানলাম। দ্রুত পরিদর্শনে যাবো। ফয়জুল্লাহপুর এলাকায় পানির স্তর কমার সঙ্গেই কাজ শুরু হবে, পরবর্তীতে অন্য এলাকাগুলোতেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, “পদ্মার ভাঙনের বিষয়টি আমরা অবগত আছি। ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষিদের আবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মন্তব্য করুন