ভয়েস অফ গোপালগঞ্জ ডেস্ক,
২০২৫ সালের নোবেল পুরস্কার ঘোষণার সূচনা হয়েছে চিকিৎসাবিজ্ঞান শাখা দিয়ে। এ বছর চিকিৎসা বা শারীরতত্ত্বে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন তিন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী— মেরি ব্রাঙ্কো, ফ্রেড রামসডেল ও শিমন সাগাগুচি। মানবদেহের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থার এক গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া ‘পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স’ বিষয়ে তাদের যুগান্তকারী গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় সোমবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে সুইডেনের স্টকহোমে অবস্থিত ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট থেকে নোবেল কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নাম ঘোষণা করে।
‘পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স’ এমন একটি প্রক্রিয়া, যা মানবদেহের ইমিউন সিস্টেমকে শরীরের নিজস্ব কোষ ও টিস্যুকে ভুলবশত আক্রমণ করা থেকে রক্ষা করে। একই সঙ্গে এটি অক্ষতিকর বহিরাগত উপাদান— যেমন কিছু খাদ্য উপাদান বা অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়াও ঠেকিয়ে রাখে।
এই প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে শরীরে দেখা দিতে পারে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, টাইপ-১ ডায়াবেটিস কিংবা মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস–এর মতো অটোইমিউন রোগ। তাই এই আবিষ্কার মানবদেহের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থার ভারসাম্য রক্ষা ও নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বলে মনে করছে বিজ্ঞানী মহল।
নোবেল কমিটির ভাষায়, “এই তিন বিজ্ঞানীর গবেষণা ইমিউন সিস্টেমের জটিলতাকে নতুনভাবে উন্মোচন করেছে। তাদের আবিষ্কার ভবিষ্যতে অটোইমিউন রোগ, অ্যালার্জি এবং অঙ্গ প্রতিস্থাপন-পরবর্তী জটিলতা প্রতিরোধে চিকিৎসা বিজ্ঞানে দিকনির্দেশনা দেবে।”
নোবেলজয়ীরা প্রত্যেকে পাবেন একটি সোনার পদক, একটি সনদপত্র, এবং সম্মিলিতভাবে ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (প্রায় ১২ লাখ মার্কিন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা) পুরস্কার হিসেবে। কোনো বিভাগে একাধিক বিজয়ী থাকলে, পুরস্কারের অর্থ সমানভাবে ভাগ করা হয়।
উল্লেখ্য, নোবেল পুরস্কার প্রতি বছর চিকিৎসা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতি— এই ছয়টি শাখায় প্রদান করা হয়। মানবসভ্যতার কল্যাণে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এটি বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত।