ভয়েস অফ গোপালগঞ্জ ডেস্ক,
গোপালগঞ্জ শহরের অলিগলি ও প্রধান সড়কগুলো এখন বেওয়ারিশ কুকুরের দখলে। রাতে বাড়ি ফেরা, ভোরে ফজরের নামাজ আদায় কিংবা সকালে হাঁটাহাটি—সব কিছুই কুকুরের আক্রমণের ভয়ে আতঙ্কে করতে হচ্ছে শহরবাসীকে। প্রতিদিন কুকুরের কামড়ে বহু মানুষ আহত হচ্ছেন। শিশুরা কুকুরের ভয়ে স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। সব মিলিয়ে শহরজুড়ে জনজীবন চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
গত বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে শহরের মৌলভীপাড়া এলাকায় কুকুরের তাড়া খেয়ে ড্রেনে পড়ে সোহাগী (১২) নামে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু স্থানীয়দের আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
২০১৪ সালে উচ্চ আদালতের রায়ে কুকুর নিধন নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে শহরে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ্যাকরণ কর্মসূচি চালুর কথা থাকলেও সেটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, জন্ম নিরোধ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হলেও তা এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।
বর্তমানে নবীনবাগ, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এলাকা, বড় বাজার, মিয়াবাড়ি, পোস্ট অফিস মোড়, মিয়াপাড়া, মোহাম্মদপাড়া, মৌলভীপাড়া, লঞ্চঘাটসহ শহরের প্রায় সব এলাকায় কুকুরের দল ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোথাও সড়কের মাঝখানে শুয়ে থাকে, আবার কোথাও ৫–১০টি কুকুর একসঙ্গে দল বেঁধে ঘোরাফেরা করছে। এতে পথচারীরা সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকেন।
শুধু গত ১০ মাসে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে জলাতঙ্কের টিকা নিয়েছেন ১৫শ’র বেশি মানুষ। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১০–১৫ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিতে আসছেন।
শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের বেলায় কুকুর এড়িয়ে চলা গেলেও রাতে একা চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমণ ও উৎপাত বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।