ভয়েস অফ গোপালগঞ্জ ডেস্ক,
বাংলা প্রবাদ আছে— “চোরে শোনে না ধর্মের কাহিনী।” এরই বাস্তব রূপ যেন দেখা যাচ্ছে গোপালগঞ্জে। সাম্প্রতিক সময়ে জেলার বিভিন্ন মসজিদে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটছে। মসজিদের মোটর, আইপিএস, ব্যাটারি থেকে শুরু করে দানবক্সের টাকাও চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। এতে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতে পুলিশের টহল কার্যক্রম শিথিল থাকায় চোরেরা সুযোগ নিচ্ছে। তালা ভেঙে মসজিদে প্রবেশ করে তারা দানবক্সসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলা মার্কাজ মসজিদ, হাসপাতাল জামে মসজিদ, নবীনবাগ সিদ্দিকিয়া জামে মসজিদসহ একাধিক মসজিদে চুরির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতিটি মসজিদ কমিটির উচিত নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা।
অন্যদিকে, সম্প্রতি ১৬ জুলাই এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে শহরে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনায় ৫ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ ১৬টি মামলা করেছে এবং ১৭ হাজারেরও বেশি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। মামলার আসামি ধরতে পুলিশ ব্যস্ত থাকায় সুযোগ নিচ্ছে চোর ও ছিনতাইকারীরা।
শহরের নবীনবাগ, মিয়াবাড়ি, বেদগ্রাম, ঘোষেরচর, মান্দারতলা, পাঁচুড়িয়া ও সোনাকুড়সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে।
মিয়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সুবহান মিয়া জানান, “সকাল ১০টার দিকে এ্যাপাচি মোটরসাইকেলে আসা দুইজন লোক পানি চাওয়ার অজুহাতে আমার স্ত্রীর কাছে গিয়ে গলার চেইন ছিনিয়ে নেয়।”
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক নাযির জাকির নবীনবাগ এলাকায় বসবাস করেন। তিনি জানান, গত দুই মাসে তার বাসায় তিনবার চুরি হয়েছে। অভিযোগ করলেও পুলিশ তাকে পরামর্শ দিয়েছে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের।
একই এলাকার জামান সাহেবেরও বাসায় চুরি হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। দিনে তারা শ্রমিকের কাজ করে, রাতে চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।”
এছাড়া প্রেসক্লাব গোপালগঞ্জেও সম্প্রতি জানালা ভেঙে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানার দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, “খুব দ্রুত চুরি ও ছিনতাইয়ের সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।”